বিশ্বব্যাপী উচ্চশিক্ষার দ্রুত পরিবর্তনশীল বাস্তবতায় বাংলাদেশকে সময়োপযোগী, দক্ষতাভিত্তিক ও উদ্ভাবনমুখী শিক্ষায় অগ্রসর হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ও সমাবর্তন বক্তা এহসানুল হক মিলন। শনিবার (৬ ডিসেম্বর) রাজধানীর বাংলাদেশ চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪র্থ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।
সমাবর্তন বক্তা মিলন বলেন, বিশ্ব অর্থনীতি, শিল্প কাঠামো এবং শ্রমবাজার দ্রুত বদলে যাচ্ছে। অটোমেশন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, বায়োটেকনোলজি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি এবং ডিজিটাল অর্থনীতি মানুষের কাজের ধরন পুরোপুরি পরিবর্তন করে দিচ্ছে। ফলে আধুনিক কর্মক্ষেত্রে নিয়োগদাতারা শুধু তাত্ত্বিক জ্ঞান নয়, বরং প্রযুক্তিগত দক্ষতা, অভিযোজন ক্ষমতা, সৃজনশীলতা, সমালোচনামূলক চিন্তাশক্তি এবং জটিল সমস্যা সমাধানের সক্ষমতাকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এখনো তাত্ত্বিক পাঠদানে সীমাবদ্ধ। উদ্ভাবন, প্রয়োগমূলক গবেষণা, উদ্যোক্তা বিকাশ, শিল্প–সংযুক্ত শিক্ষাদান, ইনকিউবেশন ও প্রযুক্তিগত দক্ষতা বৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য ঘাটতি রয়েছে। দেশের ২৩টিরও বেশি মন্ত্রণালয় আলাদা দক্ষতা উন্নয়ন কর্মসূচি পরিচালনা করলেও সেগুলোর মাঝে সমন্বয় না থাকায় জাতীয় স্কিল ইকোসিস্টেম সুসংহত হতে পারছে না।
মিলন আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে প্রথাগত শ্রেণিকক্ষভিত্তিক শিক্ষার বাইরে এসে বাস্তবমুখী, শিল্পসংযুক্ত এবং প্রতিযোগিতামূলক দক্ষতানির্ভর পাঠক্রমে গুরুত্ব দিতে হবে। উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে শুধু জ্ঞান বিতরণের কেন্দ্র না রেখে উদ্ভাবন, গবেষণা, উদ্যোক্তা তৈরি ও জাতীয় উন্নয়নের চালিকাশক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।
উদাহরণ হিসেবে তিনি চীন ও মালয়েশিয়ার দক্ষতা উন্নয়ন মডেলের কথা তুলে ধরে বলেন, বাংলাদেশকে নিজেদের বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে একটি আধুনিক, সমন্বিত ও দক্ষতাভিত্তিক উচ্চশিক্ষা কাঠামো নির্মাণ করতে হবে।
তিনি বলেন,
-
ইন্টার্নশিপ বাধ্যতামূলক করা,
-
প্রকল্পভিত্তিক শিক্ষা,
-
শিল্পে কাজের অভিজ্ঞতা,
-
অনলাইন প্ল্যাটফর্মে শিক্ষার প্রসার,
-
অভ্যন্তরীণ দক্ষতা স্বীকৃতি (Recognition of Prior Learning)
এসবকে উচ্চশিক্ষার কাঠামোয় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
মিলন বলেন, আইসিটি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, এগ্রোটেক, উৎপাদনশীল খাত, লজিস্টিকস, স্বাস্থ্যসেবা ও ক্রিয়েটিভ ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি না হলে শিক্ষার্থীরা প্রতিযোগিতামূলক বিশ্ববাজারে টিকে থাকতে পারবে না।
নবীন গ্র্যাজুয়েটদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “পরিবর্তনকে স্বাগত জানান, নতুন চিন্তা-চেষ্টায় সাহসী হোন এবং মানবিকতা বজায় রেখে নেতৃত্ব দিন। নিজেকে সবসময় জিজ্ঞেস করুন—দেশের জন্য আপনি কী করতে পারেন।”
সমাবর্তনে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এস. এম. এ. ফায়েজ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। তিনি রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্যের পক্ষে ২ হাজার ৩২৬ জন শিক্ষার্থীকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি প্রদান করেন। একই অনুষ্ঠানে ২৭টি বিশেষ অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়—যার মধ্যে রয়েছে ৬টি চ্যান্সেলরস অ্যাওয়ার্ড, ৫টি বোর্ড অব ট্রাস্টিজ চেয়ারম্যানস অ্যাওয়ার্ড এবং ১৬টি ভাইস চ্যান্সেলরস অ্যাওয়ার্ড।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান এম. শামসুল আলম লিটন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম।
এমএফ/বিকল্পকন্ঠ
#AtishDipankarConvocation #HigherEducationBD #EhsanulHaqueMilon #SkillsForFuture #BangladeshGraduation2025
Facebook Link – https://www.facebook.com/Bikalpokontho
Website Link – https://news.mahbubuniversalbusiness.com
YouTube Link – https://www.youtube.com/@BikalpoKontho
#bikolpokontho #বিকল্পকন্ঠ #Update_news