মঙ্গলবার

১৬:০৩:০৬

২৩ ডিসেম্বর, ২০২৫

৮ পৌষ, ১৪৩২

১ রজব, ১৪৪৭

Edit Content

মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৫

সর্বশেষ
  1. Home
  2. ধর্ম
  3. নামাজে সাহু সিজদার নিয়ম

এবার ভর্তিযুদ্ধ, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ঘিরে ‘লড়াই’

এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল এবার তুলনামূলক খারাপ হয়েছে। দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডে গড় পাসের হার ৫৮ দশমিক ৮৩ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে মাত্র ৬৯ হাজার ৯৭ জন। পাসের হার কমেছে প্রায় ১৮ শতাংশ আর জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে ৭৬ হাজার ৮১৪ জন।

নিম্নমুখী এমন ফলাফলে অনেক শিক্ষার্থীর মন খারাপ। অনেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন। কারণ এইচএসসির পর এবার ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির চ্যালেঞ্জ শিক্ষার্থীদের সামনে। সেখানে রীতিমতো ভর্তিযুদ্ধে নামতে হবে তাদের।

 

যদিও সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল এবং ডেন্টাল কলেজগুলোতে উচ্চশিক্ষার স্তরে প্রায় ১৩ লাখের মতো আসন রয়েছে। আর এবার পাস করেছেন মাত্র ৭ লাখ ২৬ হাজার ৯৬০ জন শিক্ষার্থী। সেই হিসাবে ৬ লাখেরও বেশি আসন ফাঁকা পড়ে থাকবে।

ইউজিসির তথ্যমতে, দেশে বর্তমানে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ৫৫টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। তবে শিক্ষা কার্যক্রম চালু রয়েছে এমন বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ৫৩টি। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে সবমিলিয়ে ৫০ হাজারের মতো ভর্তিযোগ্য আসন রয়েছে। সরকারি মেডিকেল কলেজ ও ডেন্টাল মিলিয়ে ভর্তিযোগ্য আসন প্রায় পাঁচ হাজার। মূলত এ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তিতে বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে।

 

 

নিম্নমুখী ফলাফলের বছরে এবার জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীও কমেছে। মাত্র ৬৯ হাজার ৯৭ জন জিপিএ-৫ পেয়েছেন। তবে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে যে আসন রয়েছে, তাতে শুধু জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীরাও সবাই সেখানে ভর্তির সুযোগ পাবেন না।

তবে ভর্তি পরীক্ষায় জিপিএ কম পাওয়া অনেক শিক্ষার্থীও প্রস্তুতি ভালো নিয়ে চান্স পেয়ে যায়। সেক্ষেত্রে অনেক জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীরও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ হবে না।

এদিকে, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরেও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো সরকারি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সেখানে প্রায় ১২ লাখ আসন রয়েছে। ফলে সবমিলিয়ে সরকারি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান যে ১৩ লাখ আসন রয়েছে, তার অর্ধেকের বেশি ফাঁকা থাকবে।

 

শিক্ষার্থীদের টার্গেট ২০-২২টি বিশ্ববিদ্যালয়

বুয়েট, ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম জাহাঙ্গীরনগর, জগন্নাথ, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ ২০-২২ বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে নজর শিক্ষার্থীদের। তারা এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য নিজেদের প্রস্তুত করছেন। স্বল্প যে আসন রয়েছে এসব জায়গায়, তাতে জায়গা করে নিতে মরিয়া।

 

নটর ডেম কলেজ থেকে এবার বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়ে এইচএসসি পাস করেছেন নাজমুল ইসলাম। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, প্রত্যাশা ছিল গোল্ডেন জিপিএ-৫। কিন্তু সেটা হলো না। এক বিষয়ে এ প্লাস মার্কস না পাওয়ায় গোল্ডেন হাতছাড়া হয়ে গেছে। এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রস্তুতি নিচ্ছি। প্রথম টার্গেট বুয়েট। এখানে না হলে ঢাবি অথবা কুয়েট-চুয়েট চেষ্টা করবো।’

 

ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এইচএসসিতে জিপিএ-৪.৬০ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন তাসনিম মিতু। তিনি মানবিকের শিক্ষার্থী। তার প্রথম টার্গেট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে না হলে রাজশাহী, জাহাঙ্গীরনগর ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে চেষ্টা করবেন। মিতু বলেন, ‘ফ্যামিলি যেহেতু ঢাকা থাকে, আমি সেজন্য ঢাবিতে বেশি চেষ্টা করবো। না হলে তখন অন্যগুলোতেও চেষ্টা করবো।’

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়-মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ না পেলেও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজসহ অন্যান্য বেসরকারি উচ্চশিক্ষার প্রতিষ্ঠানে ভর্তির সুযোগ পাবেন শিক্ষার্থীরা।

ইউজিসির তথ্য অনুযায়ী, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজের বাইরে প্রাইভেট মেডিকেল কলেজে ৬ হাজার ৩৪০টি, প্রাইভেট ডেন্টাল কলেজে ১ হাজার ৩৫০টি, আর্মড ফোর্স মেডিকেল কলেজে ৩৫০টি আসন রয়েছে।

এছাড়া শিক্ষা কার্যক্রম চালু থাকা শতাধিক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স কোর্সে ১ লাখ ৮৬ হাজার ৮৯৯টি, পাস কোর্সে ১ হাজার ১৬০টি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ৭ কলেজে ২৩ হাজার ৬৩০টি, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ২৬৪ কলেজে অনার্সে ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৮৫টি, পাস কোর্সে ৪ লাখ ২১ হাজার ৯৯০টি আসন রয়েছে।

অন্যদিকে ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বিভিন্ন মাদরাসায় ৬৪ হাজার ৫২৯টি, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮৭ হাজার ৫৯৩টি, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ৭২০টি, টেক্সটাইল কলেজে ৭২০টি, মেরিন কলেজে ৬৬০টি, ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজে ৩ হাজার ৭৯০টি, আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি এবং এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন বাংলাদেশে ৮০০টি, নার্সিং ও মিডওয়াইফারিতে ৫ হাজার ৬০০টি আসন রয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. হাফিজুর রহমান বলেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেলে আসন সংখ্যা সীমিত থাকায় শিক্ষার্থীদের রীতিমতো লড়াই করতে হয়। সবাই যে আসন পাবে, তাও কিন্তু নয়। এই সীমাবদ্ধতার কথা বিবেচনা করে পাবলিকের বাইরের প্রতিষ্ঠানগুলোতেও শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা করতে হবে। তবে সরকারের উচিত হবে সেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উচ্চশিক্ষার মান নিশ্চিত করা, যেন শিক্ষার্থীরা দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে পারে।

আরও পড়ুন

Scroll to Top