গাজায় চৌদ্দ মাসের চলমান ইসরাইলি আগ্রাসনে আটশর বেশি শিশু তাদের প্রথম জন্মদিনের আগেই প্রাণ হারিয়েছে। মঙ্গলবার ফিলিস্তিনি সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানায় ব্রিটেনভিত্তিক মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আই।
খবরে বলা হয়, ইসরাইলি হামলায় সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে গাজার শিশুরা। আটশর বেশি নবজাতক শিশু ইসরাইলি হামলায় তাদের প্রথম জন্মদিনের আগেই নিহত হয়েছে। এ ছাড়া ইসরাইলি হামলায় অবরুদ্ধ উপত্যকাটির ১৭ হাজারের বেশি শিশু নিহত হয়েছে।
এদিকে আগ্রাসনের মধ্যে তীব্র শীত ও বৃষ্টির কবলে পড়েছেন গাজার বাসিন্দারা। বৃষ্টিতে গাজার বিভিন্ন স্থানের শরণার্থী শিবির পুরো ভেসে গেছে। শীত ও বৃষ্টি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের অভাবে রয়েছেন গাজাবাসী।
তীব্র শীতে হাইপোথারমিয়ায় আক্রান্ত হয়ে গাজায় ছয় শিশুসহ সাত জনের মৃত্যু হয়েছে।
এর মধ্যে গাজার বিভিন্ন হাসপাতাল লক্ষ্য করে ইসরাইলি হামলা অব্যাহত রয়েছে। উত্তর গাজার কামাল আদওয়ান হাসপাতালের পর এবার গাজা শহরের আল-ওয়াফা ও আহলি হাসপাতাল লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে ইসরাইলি বাহিনী।
ইসরাইলি বাহিনী বলছে, হাসপাতালগুলো ব্যবহার করে স্বাধীনতাকামী হামাস যোদ্ধারা তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তবে এ বিষয়ে কোনো প্রমাণ দেয়নি তারা।
সামগ্রিক দুর্যোগের মধ্যেই গাজাবাসীর জন্য প্রয়োজনীয় মানবিক সহায়তা প্রদানে বাধা দিচ্ছে ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ।
আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে, মানবিক সহায়তার বাধা দেওয়ার মাধ্যমে গাজার পরিস্থিতি আরও শোচনীয় করছে ইসরাইলিরা।
রোববার ফিলিস্তিনের জন্য জাতিসংঘের বিশেষ ত্রাণ সংস্থা ইউএনআরডব্লিএ জানায়, গাজায় দুর্ভিক্ষ মোকাবিলায় জরুরি ভিত্তিতে যুদ্ধবিরতি প্রয়োজন।
এদিকে ফিলিস্তিনের সেন্ট্রাল ব্যুরো অব স্ট্যাটিস্টিকস জানিয়েছে, চৌদ্দ মাসের ইসরাইলি আগ্রাসনে গাজা তার জনসংখ্যার ছয় ভাগ হারিয়েছে।
মঙ্গলবার প্রকাশিত সংস্থাটির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, ইসরাইলি হামলার কারণে গাজায় ৪৫ হাজার ৫৪১ জন নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে প্রায় এক লাখ লোক গাজা ছেড়ে অন্য স্থানে চলে গেছেন।