ছাত্রদল নেতা আবু হায়াতের উদ্যোগে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে ঢাবি ক্যাম্পাসজুড়ে ব্যতিক্রমী কর্মসূচি :
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের স্মরণে এক ব্যতিক্রমী ও তাৎপর্যপূর্ণ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। রোববার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেল তিনটা থেকে সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে এ কর্মসূচি চলমান থাকে।

কর্মসূচির অংশ হিসেবে টিএসসি প্রাঙ্গণ, কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে, হাকিম চত্বর, মধুর ক্যান্টিন, কলাভবন, মল চত্বর, ভিসি চত্বর, সোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বর, আইন অনুষদ, মোতাহার হোসেন ভবন, বিজ্ঞান গ্রন্থাগার, কার্জন হল এলাকা, দোয়েল চত্বর, চারুকলা এবং প্রতিটি আবাসিক হলসংলগ্ন এলাকায় ছোট ছোট প্ল্যাকার্ড স্থাপন করা হয়। এসব প্ল্যাকার্ডে মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার, আলবদর ও আল-শামস বাহিনীর হাতে নির্মমভাবে শহীদ হওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের নাম ও পরিচয় তুলে ধরা হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল তথ্য অনুযায়ী, মহান মুক্তিযুদ্ধে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ১৯৫ জন শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারী শহীদ হন। স্বাধীনতা অর্জনে তাঁদের আত্মত্যাগ ইতিহাসের এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় হলেও সময়ের ব্যবধানে সেই ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে অনেকটাই অস্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এই বাস্তবতা উপলব্ধি করেই শহীদদের নাম, পরিচয় ও আত্মত্যাগের ইতিহাস দৃশ্যমান করার লক্ষ্যে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়।

কর্মসূচির উদ্যোক্তা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক আবু হায়াত মো. জুলফিকার জেসান বিকল্পকন্ঠ কে বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের শহীদরা কেবল ইতিহাসের পাতায় সীমাবদ্ধ কোনো নাম নন; তাঁরা আমাদের অস্তিত্ব, স্বাধীনতা ও আত্মমর্যাদার ভিত্তি। তাঁদের আত্মত্যাগ নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেওয়া আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।” তিনি আরও বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যে সকল শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মচারী মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয়েছেন, তাঁদের ইতিহাস সবার কাছে তুলে ধরা আমাদের অবশ্য কর্তব্য।
এই কর্মসূচির মাধ্যমে ক্যাম্পাসজুড়ে শহীদদের স্মৃতি দৃশ্যমান করার পাশাপাশি তরুণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, দায়বদ্ধতা ও প্রকৃত ইতিহাসচর্চার আগ্রহ তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। আয়োজকেরা আশা প্রকাশ করেন, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে কেন্দ্র করে এমন উদ্যোগ ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে এবং শহীদদের স্মৃতি সংরক্ষণে এটি একটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
এমএফ/বিকল্পকন্ঠ
#শহীদবুদ্ধিজীবীদিবস #ঢাকাবিশ্ববিদ্যালয় #মুক্তিযুদ্ধ #ছাত্রদল #শহীদদেরস্মরণ