মঙ্গলবার

১৯:৪৯:০১

২৩ ডিসেম্বর, ২০২৫

৮ পৌষ, ১৪৩২

১ রজব, ১৪৪৭

Edit Content

মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৫

সর্বশেষ
  1. Home
  2. ধর্ম
  3. নামাজে সাহু সিজদার নিয়ম

নির্বাচনে নারীর ৩৩ শতাংশ অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক করার দাবি

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১০০ সংরক্ষিত আসনে সরাসরি নির্বাচন এবং রাজনৈতিক দলের প্রার্থী মনোনয়নে ৩৩ শতাংশ নারীর অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক করার দাবি জানিয়েছে নারীর রাজনৈতিক অধিকার ফোরাম।

মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে এ প্রস্তাব দেয় ফোরামটি।

লিখিত প্রস্তাবে তারা জানায়, বাংলাদেশের রাজনৈতিক কাঠামোতে নারীর প্রকৃত ক্ষমতায়ন এবং সংসদীয় প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ‘নারীর রাজনৈতিক অধিকার ফোরাম’ নির্বাচন কমিশনকে একটি লিখিত প্রস্তাব দিয়েছে। এই প্রস্তাবনায় ২০২৬ সালের জাতীয় নির্বাচনে নারীদের জন্য প্রস্তাবিত ১০০টি সংরক্ষিত আসনে সরাসরি নির্বাচনের বিধান প্রবর্তন এবং রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য সাধারণ আসনে ৩৩ শতাংশ নারী প্রার্থী মনোনয়ন বাধ্যতামূলক করার দাবি জানানো হয়েছে। এই পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশের সংবিধানের মূলনীতি অনুযায়ী নারীর রাজনৈতিক অধিকার সুরক্ষিত হবে এবং গণতন্ত্রের ভিত্তি আরও শক্তিশালী হবে বলে মনে করে সংগঠনটি।
সংগঠনের মূল প্রস্তাবগুলো হচ্ছে—

সংরক্ষিত আসনে সরাসরি নির্বাচন : ফোরামের প্রধান দাবি হলো, সংসদের সংরক্ষিত আসনের সংখ্যা ৫০ থেকে বাড়িয়ে ১০০ করা হোক এবং এই আসনগুলোতে সরাসরি জনগণের ভোটে নারী প্রতিনিধিরা নির্বাচিত হবেন। তারা যুক্তি দিয়েছেন যে, বর্তমানে দলীয় মনোনয়নের মাধ্যমে নির্বাচিত সংরক্ষিত আসনের নারী সংসদ সদস্যরা জনগণের কাছে সরাসরি জবাবদিহিতার বাইরে থাকেন, যা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার পরিপন্থি।
নারী প্রার্থীর বাধ্যতামূলক মনোনয়ন : আগামী নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোকে তাদের মোট প্রার্থীর মধ্যে অন্তত ৩৩ শতাংশ নারী প্রার্থীকে মনোনয়ন দিতে হবে। ২০৩০ সালের মধ্যে এই হার ৫০%-এ উন্নীত করার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে। এই বিধান মানতে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন ও নির্বাচনে অংশগ্রহণের যোগ্যতা বাতিল করার মতো কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়েছে।

দলীয় কাঠামোতে নারী নেতৃত্ব : প্রস্তাব অনুযায়ী, রাজনৈতিক দলগুলোর জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের সব কমিটিতে নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। ২০২৬ সালের নির্বাচনের আগে অন্তত ২৫% এবং ২০৩০ সালের মধ্যে এই হার ৩৩ শতাংশে উন্নীত করার দাবি জানানো হয়েছে।

নির্বাচনী ব্যয়ের রাষ্ট্রীয় সহায়তা : নারী প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচারণার জন্য নির্ধারিত ব্যয়সীমার সমপরিমাণ অর্থ রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে অনুদান হিসেবে দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। এর ফলে অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল নারী প্রার্থীরাও নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় সক্রিয়ভাবে অংশ নিতে পারবেন।

হয়রানি প্রতিরোধে নীতিমালা : নারী রাজনীতিবিদ ও প্রার্থীদের অনলাইন এবং অফলাইন হয়রানি থেকে রক্ষা করতে সুনির্দিষ্ট আইন এবং কার্যকর অভিযোগ নিষ্পত্তির ব্যবস্থা রাখার দাবি জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে, রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য অভ্যন্তরীণ আচরণবিধি প্রণয়নেরও সুপারিশ করা হয়েছে।

‘না ভোট’ এর অধিকার : সব নির্বাচনী আসনে ‘না ভোট’ (None of the Above – NOTA) প্রদানের বিধান ফিরিয়ে আনার দাবি জানানো হয়েছে, যা পূর্বে ২০০৮ সালের আরপিওতে থাকলেও পরবর্তীতে বাতিল করা হয়। এটি ভোটারদের কোনো প্রার্থীকেই যোগ্য মনে না হলে তাদের মতামত প্রকাশের সুযোগ দেবে এবং প্রার্থীদের জনগণের প্রতি আরও দায়বদ্ধ হতে বাধ্য করবে।

প্রস্তাবনায় ফোরামটি উল্লেখ করেছে, ৫২-এর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থান পর্যন্ত প্রতিটি ঐতিহাসিক মুহূর্তে নারীরা অগ্রণী ভূমিকা পালন করলেও, রাজনৈতিক কাঠামোতে তাদের অবদান যথাযথভাবে প্রতিফলিত হয়নি। বর্তমানে সংরক্ষিত আসন সংখ্যা বাড়লেও, তা নারীর প্রকৃত রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন বা নেতৃত্ব বিকাশের সুযোগ তৈরি করেনি। এর ফলে সংসদীয় কাঠামোতে নারীর সংখ্যা বাড়লেও তাদের ভূমিকা কার্যকর নয়।

লিখিত প্রস্তাবে ফোরাম জানায়, তারা বিশ্বাস করে যে এই প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থা সংবিধানে উল্লিখিত সমঅধিকার এবং জবাবদিহিমূলক শাসনের মূল নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে। তারা নির্বাচন কমিশনকে এই প্রস্তাবগুলো গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে আরপিও সংশোধনী প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে। অন্যথায়, দেশের জনসংখ্যার অর্ধেক অংশের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় কোনো মৌলিক পরিবর্তন না এলে তা বৈষম্যমূলক নীতিকেই পুনর্বহাল করবে বলে ফোরামটি সতর্ক করেছে।

আরও পড়ুন

Scroll to Top