বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটির নাগরিকরা বর্তমানে মাথাপিছু গড়ে প্রায় ১ লাখ ১১ হাজার ডলার ঋণের বোঝা বহন করছে।
ওয়াশিংটনভিত্তিক থিংকট্যাংক পিটার জি. পিটারসন ফাউন্ডেশন জানায়, এই অঙ্কটি চীন, ভারত, জাপান, জার্মানি ও যুক্তরাজ্যের অর্থনীতির সম্মিলিত মূল্যের সমান। মাত্র দুই মাস আগেই, গত আগস্টের মাঝামাঝি যুক্তরাষ্ট্রের ঋণ ৩৭ ট্রিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছিল। তার আগে ২০২৪ সালের নভেম্বরে ঋণ ছিল ৩৬ ট্রিলিয়ন এবং জুলাইয়ে ৩৫ ট্রিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ, প্রতি কয়েক মাস পরপরই দেশটির ঋণ বাড়ছে ট্রিলিয়ন ডলারের হারে।
পিটার জি. পিটারসন ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী মাইকেল এ. পিটারসন বলেন, মার্কিন রাজনীতিবিদরা তাদের মৌলিক আর্থিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হচ্ছেন। প্রতিনিয়ত ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন ডলার যোগ করে ঋণ বাড়ানো এবং সংকটের পর সংকট তৈরি করে বাজেট চালানো কোনো মহান জাতির জন্য উপযুক্ত নয়।
এ বছরের মে মাসে আন্তর্জাতিক ক্রেডিট রেটিং সংস্থা মুডিজ যুক্তরাষ্ট্রের ঋণের মান ‘AAA’ থেকে কমিয়ে ‘AA1’ করে। একসময় ‘AAA’ মানে বোঝানো হতো—এই ঋণ খেলাপির ঝুঁকি সবচেয়ে কম। কিন্তু মুডিজ জানায়, দীর্ঘদিনের বাজেট ঘাটতি ও সুদের খরচ নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা এই অবনমনের মূল কারণ।
এর আগে ফিচ ২০২৩ সালে এবং স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড পুওরস ২০১১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেডিট রেটিং নামিয়ে দেয়।
বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র কতটা ঋণ নিতে পারে তা নিয়ে বিতর্ক থাকলেও, বর্তমানে ঋণের বৃদ্ধির হার অস্থিতিশীল ও ঝুঁকিপূর্ণ—এ বিষয়ে সবাই একমত।
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেশনাল বাজেট অফিস (সিবিও) অনুমান করছে, বর্তমান হারে ঋণ বাড়তে থাকলে ২০৪৭ সালের মধ্যে দেশটির ঋণ জিডিপির ২০০ শতাংশে পৌঁছাবে।
এর একটি বড় কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা উল্লেখ করছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘ওয়ান বিগ বিউটিফুল বিল অ্যাক্ট’-এর আওতায় গৃহীত ব্যাপক করছাড় নীতি, যা সরকারকে রাজস্ব ঘাটতির মুখে ফেলেছে। [সূত্র: আল-জাজিরা