নতুন রাজনৈতিক জোটের আত্মপ্রকাশ আজ: এনসিপি–রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন–এবি পার্টির ঐক্য:
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন এবং আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি)—এই তিন দলের সমন্বয়ে গঠিত নতুন রাজনৈতিক জোট আজ রোববার (৭ ডিসেম্বর) আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে। রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) বিকেল ৪টায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে নতুন এই জোটের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হবে। রাজনৈতিক অঙ্গনে ইতোমধ্যে তাদের এই উদ্যোগ নিয়ে নতুন আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব ও গণমাধ্যম সেলের সম্পাদক মুশফিক উস সালেহীন গণমাধ্যমে পাঠানো এক বার্তায় বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, ‘জুলাই অভ্যুত্থানের অঙ্গীকার রক্ষা, রাষ্ট্রে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত এবং একটি দায়বদ্ধ রাজনৈতিক কাঠামো গড়ে তোলার লক্ষ্যে আগ্রহীদের নিয়ে আমরা “রাজনৈতিক ও নির্বাচনী ঐক্য” প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিতে যাচ্ছি।’ তাঁর মতে, তিন দলের এই ঐক্য শুধু নির্বাচনকেন্দ্রিক নয়; বরং দীর্ঘমেয়াদী রাষ্ট্রসংশোধন ও গণতান্ত্রিক কাঠামো পুনর্গঠনের একটি অংশ।
জানা গেছে, এই নতুন জোট দেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক অচলাবস্থাকে চ্যালেঞ্জ করে বিকল্প রাজনৈতিক ধারার দিকনির্দেশনা দিতে চায়। জোটের নেতারা মনে করেন, দেশে স্থিতিশীল গণতন্ত্র নিশ্চিত করতে হলে জনগণকে কেন্দ্র করে নতুন রাজনৈতিক সমন্বয় গড়ে তোলা জরুরি। বিশেষ করে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি, সামাজিক বৈষম্য, প্রশাসনিক কাঠামোর অস্বচ্ছতা এবং নির্বাচনী ব্যবস্থার প্রতি আস্থা সংকট—এসব সমস্যার সমাধানে কার্যকর রাজনৈতিক ঐক্য সময়ের দাবি।
জোট সংশ্লিষ্টদের মতে, তিন দলই ইতোমধ্যে বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক ইস্যুতে সক্রিয় ভূমিকা রাখছে। এনসিপি নাগরিক অধিকার ও সংস্কার প্রশ্নে, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন রাজনৈতিক কাঠামো পুনর্গঠনে এবং এবি পার্টি রাজনৈতিক বিকল্পধারা তৈরিতে গত কয়েক বছরে নানা উদ্যোগ নিয়েছে। ফলে তাদের এই ঐক্য ভবিষ্যৎ রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ তৈরি করতে পারে বলে বিশ্লেষকদের মত।
আজকের সংবাদ সম্মেলনে তিন দলের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত থাকবেন। সেখানে তারা জোটের উদ্দেশ্য, মূল নীতিমালা, ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা এবং সম্ভাব্য রাজনৈতিক কর্মসূচি ঘোষণা করবেন বলে জানা গেছে। বিশেষভাবে আলোচনায় রয়েছে—আগামী জাতীয় নির্বাচন বা যেকোনো জাতীয় রাজনৈতিক পরিকাঠামোতে এই জোট কী ধরনের ভূমিকা রাখতে চায়, এবং দেশের সামগ্রিক বৈষম্য ও সংকট মোকাবিলায় তাদের রোডম্যাপ কী হবে।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, দেশের দুই প্রধান রাজনৈতিক শক্তির বাইরে নতুন কোনো রাজনৈতিক জোটের আবির্ভাব রাজনৈতিক অঙ্গনে বৈচিত্র্য বাড়াতে পারে। তবে এই জোট কতটা সুসংগঠিত, কতটা জনসমর্থন অর্জন করতে সক্ষম এবং কতটা কার্যকর নীতি উপস্থাপন করতে পারে—তা নির্ভর করবে তাদের বাস্তবিক রাজনৈতিক কর্মকৌশলের ওপর।
রাজধানীজুড়ে আজকের ঘোষণাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন মহলে কৌতূহল বিরাজ করছে। অনেকেই মনে করছেন, নতুন জোটের এই আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ আগামী দিনের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ একটি ধাপ হয়ে উঠতে পারে।
এমএফ/বিকল্পকন্ঠ
#নতুনরাজনৈতিকজোট #এনসিপি #রাষ্ট্রসংস্কারআন্দোলন #এবিপার্টি #রাজনৈতিকঐক্য
