দেশের লাখো মানুষের শ্রদ্ধা, অশ্রু ও ভালোবাসার মধ্যে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সম্মুখসারির যোদ্ধা ও আধিপত্যবাদবিরোধী ‘ইনকিলাব মঞ্চ’-এর মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদি।
শনিবার (২০ ডিসেম্বর) বিকেল সোয়া ৩টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বিদ্রোহী ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধির পাশে তাকে সমাহিত করা হয়।
দাফনকালে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান, সহ-উপাচার্য অধ্যাপক মামুন আহমেদ, দৈনিক আমার দেশ-এর সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর সদস্য সচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহ, ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, ডাকসুর ভিপি সাদিক কায়েমসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
ওসমান হাদির দাফনকে কেন্দ্র করে নজরুল ইসলাম সমাধি কমপ্লেক্স ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা কড়া নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হয়। টিএসসি, কেন্দ্রীয় মসজিদ ও নজরুল সমাধির মূল ফটকে ব্যারিকেড বসানো হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সার্বক্ষণিক নজরদারিতে ছিলেন।
এর আগে শনিবার দুপুর আড়াইটায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় হাদির জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় ইমামতি করেন তার বড় ভাই আবু বকর সিদ্দিক। জানাজায় অংশ নেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, বিএনপি, জামায়াত, এনসিপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারা এবং সর্বস্তরের জনগণ।
জানাজার আগে বক্তব্য রাখতে গিয়ে আবু বকর সিদ্দিক ভাইয়ের স্মৃতিচারণ করলে পুরো মাঠে কান্নার রোল পড়ে যায়। বিপুল জনসমাগমে সংসদ ভবনের মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে ওঠে, অনেকেই মানিক মিয়া এভিনিউ থেকে জানাজায় শরিক হন।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর ইনকিলাব মঞ্চ গড়ে তুলে ভারতীয় আধিপত্যবাদ ও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার কণ্ঠ হয়ে ওঠেন ওসমান হাদি। টেলিভিশন টকশো ও সামাজিক মাধ্যমে তার যুক্তিনির্ভর বক্তব্য ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন।
১২ ডিসেম্বর বিজয়নগরে দুর্বৃত্তদের গুলিতে আহত হওয়ার পর দীর্ঘ চিকিৎসা শেষে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। আজ রাষ্ট্রীয়ভাবে শোক পালন করা হচ্ছে।
এমএফ/বিকল্পকন্ঠ
#শরিফওসমানহাদি #ইনকিলাবমঞ্চ #জুলাইগণঅভ্যুত্থান #রাষ্ট্রীয়শোক #হাদিরশেষবিদায়